বিডিনিউজ 10 ডটকম: মাস্ক না পরায় যশোরের মনিরামপুর উপজেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইয়েমা হাসানের নেতৃত্বাধীন ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা পাওয়া তিন বৃদ্ধের বাড়িতে গিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আহসান উল্লাহ শরিফী।
ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ইউএনও চাল, ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে শনিবার (২৮ মার্চ) দুপুরে ওই তিনজনের বাড়িতে যান।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর ‘জমি আছে বাড়ি নেই’ প্রকল্পের আওতায় ওই তিনজনকে তিনটি ঘর তৈরি করে দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দেন আহসান উল্লাহ শরিফী।
পরে দুপুরে ইউএনও বলেন, ‘এটি একটি অমানবিক বিষয়। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তপক্ষের নির্দেশে তাদের জন্য আপৎকালীন কয়েকদিনের খাবার দিয়েছি। এই খাবার শেষ হওয়ার আগে আবার তাদের খাবার সরবরাহ করা হবে। করোনার কারণে তাদের যেন কোনো কষ্ট না হয় সে ব্যাপারে আমরা নজরদারি রাখছি।’
ক্ষমাপ্রার্থনার ব্যাপারে ইউএনও বলেন, ‘আমি এবং মনিরামপুর থানার ওসি সাহেব আমরা দুজনই গিয়েছিলাম। আমরা তাদের কাছে এই ঘটনার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষমা চেয়েছি। তারপর তাদের সবার সঙ্গে আলোচনা করেছি। আলোচনার পর তাদের কথাবার্তায় মনে হয়েছে, তারা বিষয়টি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখে ক্ষমা করে দিয়েছেন।’
এদিকে আজ সকালেই মনিরামপুরের এসিল্যান্ড সাইয়েমা হাসানকে প্রত্যাহার করে খুলনা বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয় বলে জনপ্রশাসন সচিব শেখ ইউসুফ হারুন গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
সচিব বলেন, ‘অফিস খোলার পর তদন্ত করে সাইয়েমা হাসানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সাইয়েমা হাসানের স্থলে দায়িত্ব পালনের জন্য যশোরের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা সুফল চন্দ্র গোলদারকে দায়িত্ব দিয়েছে জেলা প্রশাসন।’
জনসমাগম নিয়ন্ত্রণে গতকাল শুক্রবার বিকালে মনিরামপুরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালান এসিল্যান্ড সাইয়েমা হাসানের নেতৃত্বাধীন ভ্রাম্যমাণ আদালত। চিনেটোলা বাজারে অভিযানের সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতে সামনে পড়েন ওই তিন বয়স্ক ব্যক্তি। তাঁদের কারো মুখে মাস্ক ছিল না।
পুলিশ তাদের সাইয়েমা হাসানের সামনে হাজির করলে তিনি শাস্তি হিসেবে ওই তিনজনকে কান ধরিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখেন। এ দৃশ্য সাইয়েমা হাসান নিজেই তাঁর মোবাইল ফোনে ধারণ করেন। ওই রাতেই এই ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে গেলে মানুষের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।